নিরামিষাশিদের জন্য আলাদা টেবিল! জাতের নামে বজ্জাতি এবার আইআইটি-তেও?

IIT-Bombay, Reservation For Vegetarian: ১২, ১৩ ও ১৪ নম্বর হস্টেলের জন্য় বরাদ্দ সাধারণ ক্যান্টিনের মোট ৬টি করে টেবিল নিরামিষাশিদের জন্য সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছে তারা। পড়ুয়াদের কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানায় কাউন্...

ভাগাভাগি এবার কলেজ ক্যান্টিনের চেয়ার নিয়েও। দেশ জুড়ে বাড়তে থাকা গৈরিকীকরণের হাওয়া কি তবে এবার ছুঁয়ে ফেলল বম্বে আইআইটিকেও। সরাসরি না হলেও, কর্তৃপক্ষের সাম্প্রতিক পদক্ষেপের নেপথ্যে তেমনই হাওয়া লক্ষ্য করছেন নিন্দুকেরা। নিরামিষাশিদের বসে খাওয়া জন্য চাই আলাদা জায়গা, যেখানে আমিষভুকদের সঙ্গে ছোঁয়াছুঁয়ির প্রশ্ন থাকবে না। বেশ অনেকদিন ধরেই এমন দাবি উঠেছিল আইআইটি বম্বেতে। শেষপর্যন্ত সেই দাবির কাছে নতিস্বীকার করল আইআইটি বম্বে কর্তৃপক্ষ। নিরামিষাশিদের জন্য সাধারণ ক্যান্টিনে এবার নির্ধারণ করা হল আলাদা জায়গা। যাঁরা মাছ-মাংস খান না, তাঁরা শান্তিতে সেখানে বলে খাবার খেতে পারবেন।

আইআইটি বম্বের মেস কাউন্সিল সম্প্রতি এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ১২, ১৩ ও ১৪ নম্বর হস্টেলের জন্য় বরাদ্দ সাধারণ ক্যান্টিনের মোট ৬টি করে টেবিল নিরামিষাশিদের জন্য সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছে তারা। পড়ুয়াদের কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে ইমেলে জানিয়েছে কাউন্সিল। তারা জানিয়েছে, এ কথা সত্যি, এমন অনেক পড়ুয়াই রয়েছে যাঁরা মাছ-মাংস খাওয়া তো দূর, তারা গন্ধটুকুও সহ্য করতে পারে না। যার জন্য বহু পড়ুয়াকেই অসুবিধায় পড়তে হয়। এমনকী শারীরিক অসুস্থতারও কারণ হতে পারে ওই গন্ধ। মেসে থাকেন, এমন অনেক পড়ুয়াই আগে অভিযোগ করেছিলেন, আমিষ না খাওয়ার দরুণ অনেকেরই মাংস বা ডিম দেখে বমি পায়। তাঁদের কথা ভেবেই এই পদক্ষেপ আইআইটি বম্বের মেস কাইন্সিলের।

আরও পড়ুন: ‘নেতা নয়, কংগ্রেস দল চালাচ্ছে আরবান নকশালেরা’- কেন বলছেন মোদি?

ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ সাফ জানিয়েছেন, যে বা যাঁরা ওই নিয়মের লঙ্ঘন করবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে। এই মর্মে বম্বে আইআইটি-র তিনটি হস্টেলেই ইমেন পাঠানো হয়েছে। কাউন্সিলের তরফে সতর্ক করা হয়েছে হস্টেলের ওয়ার্ডেনদেরও। জানা যাচ্ছে, বম্বে আইআইটি হস্টেলের কমন ক্যান্টিনে সব মিলিয়ে একশোটির কাছাকাছি টেবিল রয়েছে। যার মধ্যে ৬টি এবার থেকে সংরক্ষিত থাকবে নিরামিষাশি পড়ুয়াদের জন্য। একেকটি টেবিলে সাত-আট জন করে বসতে পারেন। ফলে নিরামিষাশিদের জন্য সংরক্ষিত রইল মোট ৪৮টির কাছাকাছি আসন।

Months after controversy, IIT-Bombay sets aside space for those eating vegetarian food

কাউন্সিলের এই সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেছেন অনেকে। অনেকেই আবার ক্ষুব্ধও হয়েছেন। বম্বে আইআইটির স্টুডেন্টস কালেক্টিভ অম্বেদকার পেরিয়ার ফুলে স্টাডি সার্কেল ভাগাভাগীর এই সিদ্ধান্তকে পিছিয়ে পড়া হিসেবেই দেখছে। খাবার নিয়ে এই বৈষম্যের নীতিকে সমর্থন করে কলেজ কর্তৃপক্ষ আসলে নিজেদের অবস্থানকেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন বলে সোশ্যাল ব্লগিং সাইট এক্সে তোপ দাগে তারা।

আরও পড়ুন:নোংরা ভাষাতেই ‘দক্ষ’! বারেবারে অশ্লীল আক্রমণ বিরোধীদের! কে এই রমেশ বিধুরি?

জুলাই মাসেই বম্বে আইআইটি-র ১২ নম্বর হস্টেলে নিরামিষাশিদের জন্য আলাদা খাবার জায়গার দাবিতে পোস্টার পড়তে দেখা যায়। সেসময় অবশ্য হস্টেল মেসের জেনারেল সেক্রেটারি বিষয়টি উড়িয়ে দিয়ে বলেছিল, এমন কোনও সংরক্ষণ হচ্ছে। সরিয়ে ফেলা হয় সেই পোস্টারও। তবে তার দু'সপ্তাহ ঘুরতে না ঘুরতেই মেস কর্তৃপক্ষ বরাদ্দ করে দিলেন নিরামিষাশিদের জন্য আলাদা টেবিল। আর এর নেপথ্যে আদতে দেশ জুড়ে চলা মেরুকরণের রাজনীতির ছায়াই প্রবল ভাবে দেখছে বম্বে আইআইটি পড়ুয়াদের একাংশ।

More Articles