আরজিকর কাণ্ড: কেন স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা গ্রহণ সুপ্রিম কোর্টের?

Supreme Court on RG Kar Incidents: আগামী ২০ অগস্ট, মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন একটি বেঞ্চে সেই মামলার শুনানি হওয়ার কথা।

আরজিকর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ ও মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তাল দেশ। এমনকী সেই বিক্ষোভের আঁচ ছাড়িয়ে গিয়েছে দেশের সীমানাও। ইতিমধ্যেই ওই ঘটনায় একাধিক জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। ইতিমধ্যে দু'বার শুনানিও হয়ে গিয়েছে সেই মামলার। আরজি কর কাণ্ডের তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিয়েছে হাইকোর্ট। এবার সেই ঘটনা নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে মামলা গ্রহণ করল সুপ্রিম কোর্ট।

আগামী ২০ অগস্ট, মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন একটি বেঞ্চে সেই মামলার শুনানি হওয়ার কথা। প্রধান বিচারপতি ছাড়াও এই বেঞ্চে থাকছেন বিচারপতি জেবি পর্দিওয়ালা ও বিচারপতি মনোজ মিশ্র। বৃহস্পতিবারই আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের ন্য়ক্কারজনক ঘটনার মামলাটি স্বতঃপ্রণোদিতভাবে নেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়ে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়কে একটি চিঠি লিখেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী, উজ্জ্বল গৌর এবং রোহিত পান্ডে। তাঁরা বলেছিলেন এটা পরিস্থিতির দাবি। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের এই ঘটনাকে গুরুত্ব সহকারে দেখা উচিত এবং হস্তক্ষেপ করা উচিত।

আরও পড়ুন: আর জি কর কাণ্ড উপলক্ষ্য মাত্র, ক্ষোভের বারুদ জমতে দেখেও দেখেনি শাসক দল

চিঠিতে আরও বলা হয়েছিল, “বিচার বিভাগকে ন্যায়বিচারের চূড়ান্ত অভিভাবক হিসাবে দেখে গোটা দেশ। যাদের কান্নাকে স্তব্ধ করে দিয়েছে বর্বরতা, তাদের শেষ আশ্রয়স্থল। এই ক্ষেত্রে ভুক্তভোগী, একজন তরুণ ডাক্তার, যার জীবন অন্যদের সেবা করার জন্য নিবেদিত ছিল। আমাদের আইনি ব্যবস্থায় যে সর্বোচ্চ ন্যায়বিচার প্রদান করা যায়, তার চেয়ে কিছু কম তাঁকে দেওয়া যায় না। তাঁর মৃত্যু যেন বৃথা না যায়। যাতে অন্য কোনও মহিলার এই দুর্ভাগ্য না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। এই মৃত্যু আমাদের সেই কাজের অনুপ্রেরণা হওয়া উচিত।”

এর মধ্যে গত শনিবার আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ন্যক্কারজনক ঘটনার বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটি পিটিশন দাখিল করা হয়। সেখানেও বিষয়টি আমলে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয় আদালতকে। আরজি কর মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার পরেই সুপ্রিম কোর্টে ক্যাভিয়েট দাখিল করার কথা বললেন রাজ্যের বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারী। সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, ''অনেকেই জানেন পুলিশের কর্তারা ওই পরিবারকে ভয় দেখিয়ে বা অনেক কিছু দেওয়ার বিনিময়ে প্রকৃত তদন্ত আটকাতে চেয়েছিল। আসল দোষীদের আড়াল করার চেষ্টা হয়েছিল। তাই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ ভাল দিক। তবে এখন প্রথমেই যেটা করা উচিত তা হল সুপ্রিম কোর্টে ক্যাভিয়েট দাখিল করা। যাতে চ্যালেঞ্জ করে মামলা না করতে পারে মমতার সরকার।'' তিনি সেই আবেদন আদৌ করেছিলেন কিনা তা স্পষ্ট নয়, তবে তার আগেই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আরজি কর মামলাটি গ্রহণ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। ২০ তারিখ অর্থাৎ মঙ্গলবারই তার শুনানি।

আরও পড়ুন: ১০ দফা দাবিতে অনড় আরজি করের জুনিয়র চিকিৎসকরা

রবিবারও আরজি করের ঘটনার নিয়ে শহর জুড়ে ছিল প্রতিবাদের ছবি। ইস্টবেঙ্গল-মোহনমাগান ডুরান্ড কাপের ডার্বি ম্যাচ বাতিল হওয়ার পর যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের আশপাশে নামে বিক্ষোভকারীদের ঢল। তিন ফুটবল ক্লাবের সমর্থকেরাই সামিল হন আন্দোলনে। সেই বিক্ষোভে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। সেই ঘটনাকে ঘিরে উত্তাল হয়ে ওঠে শহর কলকাতা। দফায় দফায় বিক্ষোভের মধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর মামলা পৌঁছনো বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

More Articles