পোষ্য বিড়াল থাকলে স্কিজোফ্রেনিয়া হতে পারে আপনার! ভয়াবহ তথ্য গবেষণায়...

Schizophrenia : স্কিজোফ্রেনিয়া এক জটিল মানসিক রোগ। কোনও ব্যক্তির আচরণ, অনুভূতি এবং চিন্তাভাবনাকে প্রভাবিত করে এই রোগ।

বিড়াল ভালোবাসেন? নরম আদুরে পোষ্যকে ভালো না বাসাই তো দুরূহ। বিড়াল বা অনেক পোষ্যই মানসিক আরাম জোগায়। বিষণ্ণতার সঙ্গী হয়ে ওঠে পোষ্য। কিন্তু মানসিক আরামের পাশাপাশি মানসিক সঙ্কটেরও কারণ হয়ে উঠতে পারে এই পোষ্য। বিড়ালের মালিক হলে স্কিজোফ্রেনিয়া নামক মস্তিষ্কের জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়তে পারে। অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় উঠে এসেছে এমনই ভয়াবহ তথ্য। গত ৪৪ বছর ধরে ১৭ টি গবেষণার ব্যাপক বিশ্লেষণ করে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মতো ১১টি দেশের তথ্য নিয়ে এই আশঙ্কার কথাই জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

স্কিজোফ্রেনিয়া কী?

স্কিজোফ্রেনিয়া এক জটিল মানসিক রোগ। কোনও ব্যক্তির আচরণ, অনুভূতি এবং চিন্তাভাবনাকে প্রভাবিত করে এই রোগ। পরিবেশ, জেনেটিক্স এবং পরিবর্তিত মস্তিষ্কের গঠনের মতো বিভিন্ন কারণের ফলেই স্কিজোফ্রেনিয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়। রোগটি বংশানুক্রমিকভাবেও চলে আসে। এমন কিছু শব্দ শোনা যা বাস্তবে ঘটছে না, এমন চরিত্রদের দেখা যা বাস্তবে নেই সবটাই ঘটতে থাকে আক্রান্তের সঙ্গে। স্পষ্টভাবে চিন্তা করতেও সমস্যা হয়। বিভ্রান্তি, মিথ্যা বিশ্বাস, বাস্তব নয় এমন কিছু দেখা, শোনা, গন্ধ পাওয়া বা অনুভব করার হ্যালুসিনেশন ঘটে।

আরও পড়ুন- বিড়ালের চোখ হয়ে উঠল চশমা! যেভাবে জন্ম নিল ক্যাট আই গ্লাসেস

স্কিজোফ্রেনিয়া বুলেটিন জার্নালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, "গবেষণায় বিড়ালের সংস্পর্শে আসা এবং স্কিজোফ্রেনিয়া-সম্পর্কিত ব্যাধিগুলির ঝুঁকির সম্পর্ক রয়েছে বলেই দেখা গেছে। বিড়ালের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের স্কিজোফ্রেনিয়া হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় দ্বিগুণ।" গবেষকরা মনে করছেন, পরজীবীই এই রোগের কারণ হিসাবে কাজ করতে পারে।

আগেকার গবেষণায় বিড়ালের সঙ্গে সম্পর্ক এবং স্কিজোফ্রেনিয়ার মধ্যে সম্ভাব্য সংযোগ পাওয়া গেছিল। টক্সোপ্লাজমা গন্ডি প্যারাসাইটের সংস্পর্শে আসাই এই রোগের কারণ হতে পারে। এই পরজীবীটি বিড়ালের কামড়, শারীরিক তরলের সংস্পর্শে আসা বা দূষিত জল, কম রান্না করা মাংসের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করতে পারে। স্নায়ুতন্ত্রে ঢুকে পড়ে নিউরোট্রান্সমিটারগুলিকে প্রভাবিত করার ক্ষমতা আছে এই পরজীবীর। কিন্তু কোনও লক্ষণই সেভাবে আগে থেকে প্রকাশ পায় না।

সাধারণত স্কিজোফ্রেনিয়ার কোনও নিরাময় নেই। তবে এর লক্ষণগুলি ওষুধ এবং বিবিধ থেরাপির মাধ্যমে সামলানো যেতে পারে। তাবলে কি বিড়ালকে ভালোবাসা বারণ? পোষ্যের সঙ্গে সম্পর্ক সুস্থ থাক, কিন্তু সতর্কতাও প্রয়োজন। পোষ্যের নিয়মিত টিকাকরণ এবং নিজেকে সাবধানে রাখলেই বিড়ালের পরজীবী থেকে দূরে থাকা যায়।

 

More Articles