এক বছর ধরে পাখির মুখোশ পরে রয়েছেন এই বিজ্ঞানী! কারণ জানলে চমকে উঠবেন...

Bird Mask Viral Photo : মা পাখি আর বাবা পাখি মানুষের মুখ মনে রাখে। ফলে একবার মুখ মনে থেকে যাওয়াতে সেই মানুষের পক্ষে পাখির নীড়ে পাখির ভাষা বোঝা অত্যন্ত কঠিন।

মানুষের নিজস্ব ভাষা আছে, সেই ভাষার লিপি আছে। মানুষ সেই ভাষায় একে অন্যের মনে কথা বোঝে, অথবা বোঝে না। মানুষ কি পশুপাখির ভাষা বোঝে? পশুপাখির তো ডাক আছে, পশুপাখিরা তো কথা বলে না। পৃথিবীর যত কথা-কুকথা সবই মানুষের! নাহ, পশুপাখিদের ভাষা আছে। সেই ভাষাতেই নিজেদের মধ্যে কথোপকথন করে তারা। মানুষের অবশ্য সেই ভাষা অজানা। কেউ কেউ প্রবল আগ্রহী মানুষ এই ভাষা শিখে নেন, কেউ প্রয়োজনে কেউ বা স্রেফ ভালোবেসেই পাখির ভাষা, পশুর ভাষা শিখতে চান। টোকিওর এক বিজ্ঞানী পাখি নিয়ে গবেষণা করছেন অনেককাল। পাখি নিয়ে কাজ করতে গেলে তো পাখির কথা বুঝতে হবে। পাখির ভাষা বুঝতে গিয়ে এমন এক পদ্ধতি ভেবেছেন তিনি, যা দেখে সারা বিশ্বই তাজ্জব!

পাখিদের ভাষার বুঝতে এক বছর ধরে পাখির মুখোশ পরেছিলেন এই বিজ্ঞানী! মুখোশ পরে পাখির কথা কীভাবে বোঝা যায়? আসলে কিছুই না, পাখিদের কিঞ্চিৎ বোকা বানানোর খেলা। পাখিদের নিকটে মানুষ গেলে তারা তো উড়ে যাবেই। ফলে পাখিদের বিশ্বাস পেতে, পাখিদের কাছাকাছি যেতে তিনি একটি মুখোশের সাহায্য নেন। অভিনব এই নতুন কৌশলটি রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়। ভদ্রলোকের নাম তোশিতাকা সুজুকি। টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সহযোগী অধ্যাপক তিনি। সম্প্রতি টুইটারে এক বিশাল পাখির মাথার মুখোশওয়ালা একজন ব্যক্তির একটি অদ্ভুত ছবি প্রকাশ্যে আসে। তারপরেই গল্পের শিকড় খোঁজার শুরু।

 

আরও পড়ুন- মৃত ভাষায় কথা বলতে পারে তোতাপাখি! যে ঘটনা চমকে দিয়েছে বিশ্বকে…

টোকিওর নাগানো প্রিফেকচারের জঙ্গলে তোলা ছবিটিতে যাকে দেখা যাচ্ছে, তিনিই তোশিতাকা। পাখিদের একটুও বিরক্ত না করে, তাদের কাছাকাছি বা তাদের বাসার কাছাকাছি যাওয়ার জন্য টানা এক বছর ধরে এই অবিশ্বাস্য ছদ্মবেশ বেছে নিয়েছিলেন তিনি। পাখির আচরণ বিশেষজ্ঞ এবং পক্ষীবিদরা বলছেন, কিছু কিছু পাখির প্রজাতি মানুষের মুখ চিনতে সক্ষম। সেক্ষেত্রে অন্যান্য পাখিদের সচেতন করার জন্য, তারা যখনই মানুষের কাছে আসতে দেখে তখনই নিয়মিত কিচিরমিচির থামিয়ে সতর্কতামূলক চিৎকার করে। বিজ্ঞানী তোশিতাকা পাখিদের বিরক্ত করতে চাননি। চেয়েছিলেন কেবল তাদের আচরণ এবং ভাষা বুঝতে। তাই মুখোশের আড়ালে বন্ধু হয়ে উঠতে চেয়েছিলেন তিনি।

তবে, এই গবেষণাটি ব্যর্থ হয়। পাখিরা ওই বিজ্ঞানীকে শনাক্ত করতে পেরেছিল। ফলে সেই সতর্কতামূলক কান্না জুড়ে দিয়েছিল। তোশিতাকা সুজুকি খুব একটা ভেঙে পড়েননি অবশ্য। তিনি বলছেন, মা পাখি আর বাবা পাখি মানুষের মুখ মনে রাখে। ফলে একবার মুখ মনে থেকে যাওয়াতে সেই মানুষের পক্ষে পাখির নীড়ে পাখির ভাষা বোঝা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়ে। পাখিরা মানুষের আভাস পেলেই সতর্ক হয় এবং কান্না জোড়ে। এই কান্না আসলে এক সতর্কতাবার্তা। পাখির এই কান্নার পোশাকি নাম 'পি তু পাই'।

 

More Articles