পুজোর বাজার মাটি, ছোট ব্যবসায়ীদের চরম দুর্ভোগ, কবে থামবে বৃষ্টি?

West Bengal Rail Update : আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে ঘনীভূত নিম্নচাপ এখন ঝাড়খণ্ডে রয়েছে।

ঋতু ঘেঁটে গিয়েছে, ক্যালেন্ডারে মাসের হিসেব মেনে চলা যাচ্ছে না বেশ কিছুকালই। বর্ষাঋতু জুড়ে ছিটেফোঁটা বৃষ্টির পর ভাদ্র আশ্বিনে ভেসে যাচ্ছে বাংলা। কাশফুল মরে গিয়েছে, নীল আকাশের জায়গায় মুখ গোমড়া আকাশ, পেঁজা তুলোর বদলে কালো মেঘ। ব্যাপক ভারী বর্ষণ চলছে টানা কয়েক সপ্তাহ ধরেই। প্রথমদিকে হালকা স্বস্তির হলেও অক্টোবর মাস ঢুকে পড়ার পরেও বৃষ্টির লাগাম নেই দেখে চিন্তা বাড়ছেই। চিন্তার বড় কারণ পুজো। পুজোর আগে সারা রাজ্যে যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে তাতে আশঙ্কা, পুজোতেও কি ভাসবে রাজ্য? এই বৃষ্টিতে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছেন ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ীরাও, পুজোর বাজারে ফুটপাথের ঢালাও কেনাবেচাতে মন্দার ছায়া। তাহলে কবে থামবে এই বৃষ্টি?

আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে ঘনীভূত নিম্নচাপ এখন ঝাড়খণ্ডে রয়েছে। ফলে বৃষ্টি বিদায়ের কোনও সম্ভাবনাই নেই এখন। আরও বেশ কিছুদিন দুর্যোগের সঙ্গেই সংসার করতে হবে পশ্চিমবাংলাকে। আবহাওয়া দফতর আপাতত জানাচ্ছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি চলবেই। শুক্র-শনিবার অবধি কিছুই আশার খবর নেই। কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনাও রয়েছে। গত বছরও কিন্তু পুজোয় বৃষ্টি হয়েছিল কলকাতায়, এমনকী কালীপুজোতেও ভিজেছিল রাজ্য। ঝাড়খণ্ড ও গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ সংলগ্ন এলাকায় এই নিম্নচাপের প্রভাবে বৃষ্টি বাড়বে বঙ্গে। শুধু আমাদের রাজ্য নয়, বিহার, ওড়িশা এবং ঝাড়খণ্ডেও প্রবল দুর্যোগ। ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি হয়েছে উত্তরবঙ্গে।

আরও পড়ুন- উত্তর কলকাতায় নামছে বিক্রম ল্যান্ডার! দুর্গাপুজোয় যে বিশাল চমক পাচ্ছে কলকাতাবাসী

দক্ষিণবঙ্গের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গেও ব্যাপক বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা। জলপাইগুড়ি, কালিম্পং, দার্জিলিং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহারের কোথাও কোথাও ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। দুই দিনাজপুর, মালদহের দু'একটি এলাকায় বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হতে পারে। উপকূল ও পশ্চিমের জেলাগুলিতে অপেক্ষাকৃত বেশি বৃষ্টিপাত হবে।

গত কয়েকদিনের ব্যাপক বৃষ্টিতে তাপমাত্রার বিপুল বদল ঘটেছে রাজ্যে। কলকাতায় মঙ্গলবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৬.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, আর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৯.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস যা স্বাভাবিকের থেকে ৪ ডিগ্রি কম। বৃষ্টির কারণে হু হু করে বাড়তে শুরু করেছে ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়ার ঘটনাও। প্রায় প্রতি ঘরেই মানুষ জ্বর, সর্দি, কাশির মতো স্বাভাবিক সংক্রমণে ভুগছেন।

আর এই প্রবল বৃষ্টির জেরে স্বাভাবিকভাবেই বন্যার আশঙ্কা দেখা দিচ্ছেই। একদিকে বৃষ্টি আর অন্যদিকে জলাধারগুলি থেকে বেশি পরিমাণে জল ছাড়ার কারণে রাজ্যের অন্তত সাতটি জেলায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। দুই বর্ধমান, বাঁকুড়া, বীরভূম, পশ্চিম মেদিনীপুর, হুগলি এবং হাওড়ার জেলায় বন্যার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

 

More Articles