ফের ভয়াবহ মিসাইল-ড্রোন হামলা ইউক্রেনে! বর্ষশেষে কেন ফের যুদ্ধের পথে রাশিয়া?
Russia-Ukraine war: ২০২৩ সাল প্রায় শেষের পথে। এর মধ্যেই ফের ইউক্রেনে নতুন করে মিসাইল হামলা চালালো রাশিয়া। শুক্রবার একসঙ্গে প্রায় ১১০টি মিসাইল হামলা চালানো হয়েছে ইউক্রেনের একাধিক শহরে।
দিন কয়েক আগেই ইউক্রেন সমস্যার সমাধানে নরেন্দ্র মোদির পরামর্শ চেয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এমনকী তাঁকে আমন্ত্রণও জানিয়েছেন রাশিয়ায়। সেই ২০২২ সালে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে হঠাৎ করেই যুদ্ধঘোষণা করে দিয়েছিল রাশিয়া। তার পর ইউক্রেন দেশটাকে কার্যত ছারখার করে দিয়েছে রুশ সেনা। ২০২২ সাল পেরিয়ে সেই রেশ পৌঁছেছে চলতি বছরেও। ২০২৩ সাল প্রায় শেষের পথে। এর মধ্যেই ফের ইউক্রেনে নতুন করে মিসাইল হামলা চালালো রাশিয়া। শুক্রবার একসঙ্গে প্রায় ১১০টি মিসাইল হামলা চালানো হয়েছে ইউক্রেনের একাধিক শহরে।
শুক্রবার সকালে ইউক্রেনের খারকিভ, শহরে মিসাইল হামলা চালায় রাশিয়া। এদিকে, ইউক্রেনের লভিভ শহরেও ড্রোন হামলা চালিয়েছে রুশ সেনা। রাশিয়া, ক্রিমিয়া ও বেলারুশ থেকে ইউক্রেনে প্রবেশ করেছে রুশ সেনা। রাজধানী কিয়েভ, খারকিভ ও ওডেসার মতো প্রধান শহরগুলিকে লক্ষ্য করে চলে হামলা। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানান, রাতারাতি প্রায় ১১০টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে ইউক্রেনে। একই সঙ্গে ইউক্রেনে চালানো হয়েছে বিধ্বংসী ড্রোনহামলা। চলতি বছরের সবচেয়ে বড় হামলা ছিল সম্ভবত এটিই।
আরও পড়ুন: জেলনস্কি বলছে, জয় মাত্র কয়েক হাত দূরে! বছর ঘুরে কোথায় দাঁড়িয়ে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ
শুক্রবারের হামলায় অন্তত ৭ জন সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছেন বেশ কয়েক জন। এদিনের হামলায় ঠিক কতজনের মৃত্যু হয়েছে, তা এখনও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। আহত বহু। জেলেনস্কি জানান, ক্রেমলিনের বাহিনী ভয়ানক সব অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। ব্যালিস্টিক থেকে শুরু করে ক্রুইজ মিসাইল পর্যন্ত ব্যবহার করা হয়েছে ইউক্রেনে হামলা চালানোর জন্য। ইউক্রেনের বায়ুসেনার মুখপাত্র যুরি ইনহাত জানিয়েছেন, রাশিয়ার কাছে যা যা শক্তিশালী অস্ত্রশস্ত্র ছিল, সবই শুক্রবার ইউক্রেনের উপর প্রয়োগ করে ফেলেছে রাশিয়া। মনে করা হচ্ছে, এখনও পর্যন্ত হওয়া সব চেয়ে বড় আকাশপথে হামলা ছিল এটিই।
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি হঠাৎ করেই ইউক্রেনে হামলা করে বসে রাশিয়া। তার পর থেকে লাগাতার হামলা চালিয়ে গিয়েছে রুশ সেনা। একের পর এক বিস্ফোরণ, হামলায় ছারখার হয়ে যায় দেশটা। গোটা দেশ রাশিয়ার বিরুদ্ধে এককাট্টা হলেও যুদ্ধ থেকে সরে আসেনি রাশিয়া। যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন ছেড়ে পালিয়ে আসতে থাকেন বাসিন্দারা। পড়শি দেশগুলিতে বাড়তে থাকে শরণার্থী ভিড়। রাশিয়ার আগ্রাসনের মুখে নতি স্বীকার করেননি জেলেনেস্কি। বরং যুদ্ধ চালিয়ে গিয়েছে ইউক্রেনের সেনা। ২০২২-র ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২৩-র ডিসেম্বর, প্রায় ২ বছর ধরে ইউক্রে-রুশ যুদ্ধ লেগেই রয়েছে। কখনও তীব্রতা কমেছে, কখনও বেড়েছে। তবে নতুন বছরেও যে ইউক্রেন-রাশিয়া অশান্তি থামছে না, তা বোধহয় ফের নতুন করে বুঝিয়ে দিল সাম্প্রতিক এই হামলা।
আরও পড়ুন: ‘ভয়ংকর খেলা’র ডাক! জার্মানির রাক্ষুসে কামান এবার ইউক্রেনের ডেরায়, কতটা শক্তিশালী এটি?
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারির পর এটাই সম্ভবত ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার সব চেয়ে বড় হামলা। ২০২২ সালের নভেম্বরে ইউক্রেনে ৯৬টি ক্ষেপণাস্ত্র হেনেছিল রাশিয়া। তার পর শুক্রবার ফের সেই ভয়ানক যুদ্ধের স্মৃতি উস্কে ফের রুশবাহিনীর হামলার মুখে পড়ল ইউক্রেন। মুখে শান্তির কথা বললেও আদৌ কি যুদ্ধশান্তির পথে যেতে চায় রাশিয়া। সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে ইউক্রেন সমস্যা মেটানোর পরামর্শ চেয়েছেন পুতিন! তবে তার পরেই এই ভয়াবহ হামলা ফের কি অশান্তির আগুনেই নতুন করে ঘি ঢালল। কেন ফের যুদ্ধের পথেই হাঁটতে চাইছে রুশবাহিনী। স্বাভাবিক ভাবেই উস্কে উঠেছে প্রশ্ন। ইজরায়েল-গাজা যুদ্ধের আবহে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ফের জেগে ওঠাকে মোটেও ভালো চোখে দেখছে না আন্তর্জাতিক কূটনীতিক মহল।